ইমেজ বা চিত্রকল্প কবিতার অত্যনত্ম গুরম্নত্বপূর্ণ ও উপাদেয় উপাদান বটে, কিন্তু তা কোনো অর্থেই কবিতার বহিরঙের বিষয় নয়৷ ইমেজ হচ্ছে কবিতার অনত্মর্গত বিষয়ক, যা যুবতী নারীর বুকে বেড়ে ওঠা সত্মনযুগলের মতোই সহজাত ও স্বতঃস্ফূর্ত৷ হেলাল আহমেদ
কবিতায় কবির উপলব্ধি বা অভিজ্ঞতাকে কখনো সংহতি, কখনো ব্যপ্তি ও বৈচিত্র্য দানের প্রয়োজনেই চিত্রকল্পের জন্ম৷ এখানে মনে রাখা প্রয়োজন ‘চিত্রকল্প’ বিচ্ছিন্নভাবে কবিতা নয় বটে, কিন্তু কবিতার উপাদেয় উপকরণ৷ ইংরেজি ভাষার ‘ইমেজ’ এবং বাংলা ভাষার ‘বাক-প্রতিমা’ কথাটিও চিত্রকল্পের সমার্থক শব্দ৷ প্রকৃত অর্থে ‘চিত্রোপমা’ বলতে যা বোঝায় তা-ই হচ্ছে মূলত ইমেজ৷ এ ইমেজ হচ্ছে কবি আত্মার গূঢ় সঙ্কেতনির্ভর৷ ইমেজে থাকে ইন্দ্রীয়বেদ্য অনুভূতির প্রকাশ৷
তবে ইমেজ কেবল সাধারণ চিত্র বা ছবি নয়৷ ইমেজ হচ্ছে আমাদের ইন্দ্রীয় চেতনার দৃষ্টি, শ্রম্নতি, স্পর্শ, ঘ্রাণ, স্বাদ ইত্যাদির উদ্বোধক৷ ইমেজ এক ধরনের ‘চিত্রোপমা’ সম্ভবত এ কারণেই চিত্রোপমা প্রধান কবি জীবনানন্দ দাশ বলেছেন, ‘উপমাই কবিত্ব’৷ ইমেজ চিত্রোপমা বটে, কিন্তু ইমেজে অন্যান্য অলঙ্কারও পরস্পরিত হয়ে থাকে৷ স্মর্তব্য, রবীন্দ্রনাথের উপমার বিশেস্নষণ প্রসঙ্গে কবি সমালোচক বুদ্ধদেব বসুর উক্তি : উপমা, উত্প্রেৰা, চিত্রকল্প এমনকি প্রতীকের সবগুলোই উপমার অভিজ্ঞানের মধ্যে ধরে নিতে হবে৷ শুধু ‘মতো’ থাকলেই উপমা হলো তা নয়, ভাব যেখানে ছবি হয়ে উঠেছে, চিনত্মা যেখানে স্পর্শসহ রূপ নিল, সেখানেই কোনো না কোনো, সূক্ষ্ম, চতুর, লুক্কায়িত উপায়ে উপমার ব্যবহার অনিবার্য৷ কবিতায় কবির শ্রবণগ্রাহ্য অভিজ্ঞতাকে ও বক্তব্যকে দৃষ্টিগ্রাহ্য রূপদানের প্রয়োজনে চিত্রোপমা বা ইমেজের ব্যবহার অপরিহার্য৷ ইমেজের ফলেই কবিতার শ্রম্নতিগ্রাহ্য অনুভূতি গুচ্ছ ভিজু্যয়াল সামগ্রীর উপাদেয় উপকরণ হয়ে ওঠে৷ সে কারণেই বাংলা কাব্যে ইমেজের ব্যবহার এমন পৌনঃপুনিক৷ কয়েকটি দৃষ্টানত্ম :
হায়রে যেমতি/স্বর্ণচূড় শস্যৰত কৃষিদল বলে,/পড়ে ৰেত্রে, পড়িয়াছে রাৰসনিকর/রবিকুল রবি শূর রাঘবের শরে৷ (মেঘনাদবধ কাব্য, প্রথম সর্গ; মাইকেল মধুসূদন দত্ত)
বসিলা যুবতী/পদতলে, আহা মরি, সুবর্ণ দেউটি তুলসীর মূলে যেন জ্বলিল৷
(ওই, চতুর্থ সর্গ, ওই)
ঘুমের মতো মেয়েগুলি/চোখের কাছে দুলি দুলি/বেড়ায় শুধু নূপুর রণরণি (মাতাল: ছবি ও গান; রবীন্দ্রনাথ)
কুহেলী গেল, আকাশে আলো দিল যে পরকাশি/ধূর্জটির মুখের পানে পার্বতীর হাসি৷ (সাগরিকা : মহুয়া, ওই)
বক্র শীর্ণ পথখানি দূর গ্রাম হতে/শস্যৰেত পার হয়ে নামিয়াছে স্রোতে৷ তৃষ্ণার্ত জিহ্বার মতো৷ (সুখ: চিত্রা; ওই)
সন্ধ্যারাগে ঝিলিমিলি ঝিলমের স্রোতখানি বাঁকা/অাঁধারে মলিন হলো, যেন খাপে ঢাকা বাঁকা তলোয়ার৷ (বলাকা : বলাকা; ওই)
হাওয়ার মুখে ছুটলো ভাঙা কুঁড়ের চাল/শিকল ছেঁড়া কয়েদী ডাকাতের মতো৷ (পৃথিবী: পত্রপুট, ওই)
অাঁচলখানি পড়েছে খসি পাশে/অাঁচলখানি পড়িবে বুঝি টুটি;/পত্রপুটে রয়েছে যেন ঢাকা/অনাঘ্রাতা পূজার ফুল দুটি৷ (নিদ্রিতা: সোনার তরী; ওই)
ছায়াখানি রক্তপদতলে/চু্যত বসনের মতো রহিল পড়িয়া;/অরণ্য রহিল সত্মব্ধ, বিস্ময়ে মরিয়া\\ (বিজয়িনী : চিত্রা; ওই)
নিকপিক করে ৰীণ কাঁকাল/পেশোয়াজ কাঁপে ঢালমাটাল/গুরম্ন উরম্নভাবে তণু নাকাল,/টলমল অাঁখি জল বোঝাই৷ (নওরোজ : জিঞ্জির, নজরম্নল) নজরম্নলের আরেকটি চিত্রকল্পে পাচ্ছি : ‘কোদালে মেঘের মউজ উঠেছে৷ আকাশের নীল গাঙে/ হাবুডুবু খায় তারা বুদ্বুদ্’৷
কি আশ্চর্য দীপাবলী জ্বেলেছো চারদিকে/বাহুমূলে চিবুকে গ্রীবায়/এমনকি ভ্রমরকৃষ্ণ খোঁপায় রেখেছো জ্বেলে/আলোর উত্সব৷/দু’চোখ নামালেই দেখি/বুকের দু’পাশে জ্বলে উজ্জ্বল আলোক সত্মম্ভ (ডুবে যাচ্ছি : প্রেমের কবিতা, আহসান হাবীব)
নীলপদ্ম যেমন করে দল মেলে/তেমনি করে তোমার চিঠির নীল খাম/ আমার হাতের মধ্যে খুলে গেল৷ (নীল খাম : ওই, ওই)
চৈতন্যের আলো পড়ে ঘুম-পাওয়া সত্তার পাপড়িত্বে/সূর্যের চুমোয় লাল পা-ুগাল৷ টেবিলের দু’টি/তরম্নণ কমলালেবু চেয়ে আছে দূরের আকাশে,/ চিকন সোনালি রম্নলি ম্রিয়মান শঙ্খ সাদা হাতে/যেন বেদনায় স্থির_ মনে হলো সেই দু’টি হাত৷ মায়াবী নদীর ভেজা সোনালি বালিতে আছে পড়ে৷ (তার শয্যার পাশে : প্রেমের কবিতা, শামসুর রাহমান)
দুর্লভ মনির মতো সত্মন/ ঘন হলো বাসনার তাপে, যেমন গ্রীষ্মের ফল/ গাঢ় হয় সূর্যের চুম্বনে৷ (সুন্দরের গাথা : প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃতু্যর আগে; ওই)
তোমার ভালোবাসায় আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম৷ যেমন নিঃঝুম দুপুরে৷ সুন্দরীর গায়ের কাছে বেড়াল : সমর্পিত, দ্বিধাহীন ও তৃপ্ত৷ (জাগরণ : যেহেতু জন্মান্ধ; আবু হেনা মোসত্মফা কামাল)
হলদ বলে না কথা, সে থাকে এ্যাম্বুশ করে চুপ/অতর্কিত ছুটে এসে পাতার শরীরে৷ নিজের স্বাৰর এঁকে যায়৷ (যুদ্ধ : কেউ কিছুই জানে না, অরম্নণাভ সরকার)
সন্ধ্যা স্নানসিক্ত তোমার চুল বেয়ে নেমে আসতো/পাতা বাহারের ঝোপের ওপর৷ (চোখের ভেতর অলিম্পন : বদ্ধমাতাল রোদে, জাহাঙ্গীর ফিরোজ)
একজনের দুই উরম্নর ফাঁকে মাংসল সঙ্গীন/অন্যের বিপরীত দেশে হরতন/ হরতনের বুকে সঙ্গীনের খোঁচা৷ সঙ্গীন থেকে বেরোল টোটা৷ টোটায় টোটায় পস্নাবিত হলো নদী/নদী হয়ে উঠলো নগ্ন নধর কানত্মি৷ ওম শানত্মি৷ ওম শানত্মি৷ ওম শানত্মি৷ (নগ্ন নধর কানত্মি আমরা তামাটে জাতি; মুহম্মদ নূরম্নল হুদা)
গহীন জঙ্গল থেকে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে আসা নাচের আদলে/ তোমার দেহের প্রতিটি ভাঁজ পাপড়ি মেলে দেয়৷ (রাত্রিবাস : বদ্ধ মাতাল রোদে, জাহাঙ্গীর ফিরোজ)
তুমি যে ল্যাবের ব্যাঙ/আলপিনে গাঁথা/ক্লোরোফরম মুখে নিয়ে বেদনা রহিত/অনিবার্য ঘুমে৷ (ধুলো : চিত্রল প্রতিবেদন, রনজু রাইম)
কবি রবীন্দ্রনাথ কবি জীবনানন্দ দাশের চিত্রকল্পসমৃদ্ধ কবিতা পাঠ করে তার ভেতর তাকিয়ে দেখার আনন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন৷ জীবনানন্দ দাশের কবিতা পূর্বাপর চিত্রকল্পসমৃদ্ধ৷ কয়েকটি দৃষ্টানত্ম:
হেমনত্মের মাঠে-মাঠে ঝরে/শুধু শিশিরের জল;/অঘ্রানের নদীটির শ্বাসে৷ হিম হয়ে আসে/বাঁশপাতা_ মরা ঘাস_ আকাশের তারা;/বরফের মতো চাঁদ ঢালিছে ফোয়ারা; (পেঁচা: ধূসর পা-ুলিপি) শ্যামার নরম গান শুনেছিল_ একদিন অমরায় গিয়ে/ছিন্ন খঞ্জনার মতো যখন সে নেচেছিল ইন্দ্রের সভায়/বাংলার নদী মাঠ ঘাসফুল ঘুঙুরের মতো তার কেঁদেছিল পায়৷ (বাংলার মুখ আমি : রূপসী বাংলা) চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,/মুখ তার শ্রাবসত্মীর কারম্নকার্য৷ (বনলতাসেন : বনলতা সেন) এই কথা বলেছিল তারে_/চাঁদ ডুবে চলে গেলে_ অদ্ভুত অাঁধারে/ যেন তার জানালার ধারে/উটের গ্রীবার মতো কোনো এক নিসত্মব্ধতা এসে৷ (আট বছর আগের একদিন : মহাপৃথিবী)
হাইড্র্যান্ট খুলে দিয়ে কুষ্টরোগী চেটে নেয় জল;/অথবা সে হাইড্র্যান্ট হয়তোবা গিয়েছিল ফেঁসে৷/এখন দুপুর রাত-নগরীতে দল বেঁধে নামে৷/ একটি মোটর কার, গাড়লের মতো গেল কেশে/অস্থির (পেট্রোল ঝেড়ে, (রাত্রি : সাতটি তারার তিমির)
ডাকিয়া কহিল মোরে রাজার দুলা,_/ডালিম ফুলের মত ঠোঁট যার, রাঙা আপেলের মতো লাল যার গাল,/চুল যার শাঙনের মেঘ, আর অাঁখি গোধূলীর মতো গোলাপী রঙিন৷ (ডাকিয়া কহিল মোরে রাজার দুলাল : ঝরা পালক)
ইমেজ বা চিত্রকল্প কবিতার অত্যনত্ম গুরম্নত্বপূর্ণ ও উপাদেয় উপাদান বটে, কিন্তু তা কোনো অর্থেই কবিতার বহিরঙের বিষয় নয়৷ ইমেজ হচ্ছে কবিতার অনত্মর্গত বিষয়ক, যা যুবতী নারীর বুকে বেড়ে ওঠা সত্মনযুগলের মতোই সহজাত ও স্বতঃস্ফূর্ত৷
কবিতায় কবির উপলব্ধি বা অভিজ্ঞতাকে কখনো সংহতি, কখনো ব্যপ্তি ও বৈচিত্র্য দানের প্রয়োজনেই চিত্রকল্পের জন্ম৷ এখানে মনে রাখা প্রয়োজন ‘চিত্রকল্প’ বিচ্ছিন্নভাবে কবিতা নয় বটে, কিন্তু কবিতার উপাদেয় উপকরণ৷ ইংরেজি ভাষার ‘ইমেজ’ এবং বাংলা ভাষার ‘বাক-প্রতিমা’ কথাটিও চিত্রকল্পের সমার্থক শব্দ৷ প্রকৃত অর্থে ‘চিত্রোপমা’ বলতে যা বোঝায় তা-ই হচ্ছে মূলত ইমেজ৷ এ ইমেজ হচ্ছে কবি আত্মার গূঢ় সঙ্কেতনির্ভর৷ ইমেজে থাকে ইন্দ্রীয়বেদ্য অনুভূতির প্রকাশ৷
তবে ইমেজ কেবল সাধারণ চিত্র বা ছবি নয়৷ ইমেজ হচ্ছে আমাদের ইন্দ্রীয় চেতনার দৃষ্টি, শ্রম্নতি, স্পর্শ, ঘ্রাণ, স্বাদ ইত্যাদির উদ্বোধক৷ ইমেজ এক ধরনের ‘চিত্রোপমা’ সম্ভবত এ কারণেই চিত্রোপমা প্রধান কবি জীবনানন্দ দাশ বলেছেন, ‘উপমাই কবিত্ব’৷ ইমেজ চিত্রোপমা বটে, কিন্তু ইমেজে অন্যান্য অলঙ্কারও পরস্পরিত হয়ে থাকে৷ স্মর্তব্য, রবীন্দ্রনাথের উপমার বিশেস্নষণ প্রসঙ্গে কবি সমালোচক বুদ্ধদেব বসুর উক্তি : উপমা, উত্প্রেৰা, চিত্রকল্প এমনকি প্রতীকের সবগুলোই উপমার অভিজ্ঞানের মধ্যে ধরে নিতে হবে৷ শুধু ‘মতো’ থাকলেই উপমা হলো তা নয়, ভাব যেখানে ছবি হয়ে উঠেছে, চিনত্মা যেখানে স্পর্শসহ রূপ নিল, সেখানেই কোনো না কোনো, সূক্ষ্ম, চতুর, লুক্কায়িত উপায়ে উপমার ব্যবহার অনিবার্য৷ কবিতায় কবির শ্রবণগ্রাহ্য অভিজ্ঞতাকে ও বক্তব্যকে দৃষ্টিগ্রাহ্য রূপদানের প্রয়োজনে চিত্রোপমা বা ইমেজের ব্যবহার অপরিহার্য৷ ইমেজের ফলেই কবিতার শ্রম্নতিগ্রাহ্য অনুভূতি গুচ্ছ ভিজু্যয়াল সামগ্রীর উপাদেয় উপকরণ হয়ে ওঠে৷ সে কারণেই বাংলা কাব্যে ইমেজের ব্যবহার এমন পৌনঃপুনিক৷ কয়েকটি দৃষ্টানত্ম :
হায়রে যেমতি/স্বর্ণচূড় শস্যৰত কৃষিদল বলে,/পড়ে ৰেত্রে, পড়িয়াছে রাৰসনিকর/রবিকুল রবি শূর রাঘবের শরে৷ (মেঘনাদবধ কাব্য, প্রথম সর্গ; মাইকেল মধুসূদন দত্ত)
বসিলা যুবতী/পদতলে, আহা মরি, সুবর্ণ দেউটি তুলসীর মূলে যেন জ্বলিল৷
(ওই, চতুর্থ সর্গ, ওই)
ঘুমের মতো মেয়েগুলি/চোখের কাছে দুলি দুলি/বেড়ায় শুধু নূপুর রণরণি (মাতাল: ছবি ও গান; রবীন্দ্রনাথ)
কুহেলী গেল, আকাশে আলো দিল যে পরকাশি/ধূর্জটির মুখের পানে পার্বতীর হাসি৷ (সাগরিকা : মহুয়া, ওই)
বক্র শীর্ণ পথখানি দূর গ্রাম হতে/শস্যৰেত পার হয়ে নামিয়াছে স্রোতে৷ তৃষ্ণার্ত জিহ্বার মতো৷ (সুখ: চিত্রা; ওই)
সন্ধ্যারাগে ঝিলিমিলি ঝিলমের স্রোতখানি বাঁকা/অাঁধারে মলিন হলো, যেন খাপে ঢাকা বাঁকা তলোয়ার৷ (বলাকা : বলাকা; ওই)
হাওয়ার মুখে ছুটলো ভাঙা কুঁড়ের চাল/শিকল ছেঁড়া কয়েদী ডাকাতের মতো৷ (পৃথিবী: পত্রপুট, ওই)
অাঁচলখানি পড়েছে খসি পাশে/অাঁচলখানি পড়িবে বুঝি টুটি;/পত্রপুটে রয়েছে যেন ঢাকা/অনাঘ্রাতা পূজার ফুল দুটি৷ (নিদ্রিতা: সোনার তরী; ওই)
ছায়াখানি রক্তপদতলে/চু্যত বসনের মতো রহিল পড়িয়া;/অরণ্য রহিল সত্মব্ধ, বিস্ময়ে মরিয়া\\ (বিজয়িনী : চিত্রা; ওই)
নিকপিক করে ৰীণ কাঁকাল/পেশোয়াজ কাঁপে ঢালমাটাল/গুরম্ন উরম্নভাবে তণু নাকাল,/টলমল অাঁখি জল বোঝাই৷ (নওরোজ : জিঞ্জির, নজরম্নল) নজরম্নলের আরেকটি চিত্রকল্পে পাচ্ছি : ‘কোদালে মেঘের মউজ উঠেছে৷ আকাশের নীল গাঙে/ হাবুডুবু খায় তারা বুদ্বুদ্’৷
কি আশ্চর্য দীপাবলী জ্বেলেছো চারদিকে/বাহুমূলে চিবুকে গ্রীবায়/এমনকি ভ্রমরকৃষ্ণ খোঁপায় রেখেছো জ্বেলে/আলোর উত্সব৷/দু’চোখ নামালেই দেখি/বুকের দু’পাশে জ্বলে উজ্জ্বল আলোক সত্মম্ভ (ডুবে যাচ্ছি : প্রেমের কবিতা, আহসান হাবীব)
নীলপদ্ম যেমন করে দল মেলে/তেমনি করে তোমার চিঠির নীল খাম/ আমার হাতের মধ্যে খুলে গেল৷ (নীল খাম : ওই, ওই)
চৈতন্যের আলো পড়ে ঘুম-পাওয়া সত্তার পাপড়িত্বে/সূর্যের চুমোয় লাল পা-ুগাল৷ টেবিলের দু’টি/তরম্নণ কমলালেবু চেয়ে আছে দূরের আকাশে,/ চিকন সোনালি রম্নলি ম্রিয়মান শঙ্খ সাদা হাতে/যেন বেদনায় স্থির_ মনে হলো সেই দু’টি হাত৷ মায়াবী নদীর ভেজা সোনালি বালিতে আছে পড়ে৷ (তার শয্যার পাশে : প্রেমের কবিতা, শামসুর রাহমান)
দুর্লভ মনির মতো সত্মন/ ঘন হলো বাসনার তাপে, যেমন গ্রীষ্মের ফল/ গাঢ় হয় সূর্যের চুম্বনে৷ (সুন্দরের গাথা : প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃতু্যর আগে; ওই)
তোমার ভালোবাসায় আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম৷ যেমন নিঃঝুম দুপুরে৷ সুন্দরীর গায়ের কাছে বেড়াল : সমর্পিত, দ্বিধাহীন ও তৃপ্ত৷ (জাগরণ : যেহেতু জন্মান্ধ; আবু হেনা মোসত্মফা কামাল)
হলদ বলে না কথা, সে থাকে এ্যাম্বুশ করে চুপ/অতর্কিত ছুটে এসে পাতার শরীরে৷ নিজের স্বাৰর এঁকে যায়৷ (যুদ্ধ : কেউ কিছুই জানে না, অরম্নণাভ সরকার)
সন্ধ্যা স্নানসিক্ত তোমার চুল বেয়ে নেমে আসতো/পাতা বাহারের ঝোপের ওপর৷ (চোখের ভেতর অলিম্পন : বদ্ধমাতাল রোদে, জাহাঙ্গীর ফিরোজ)
একজনের দুই উরম্নর ফাঁকে মাংসল সঙ্গীন/অন্যের বিপরীত দেশে হরতন/ হরতনের বুকে সঙ্গীনের খোঁচা৷ সঙ্গীন থেকে বেরোল টোটা৷ টোটায় টোটায় পস্নাবিত হলো নদী/নদী হয়ে উঠলো নগ্ন নধর কানত্মি৷ ওম শানত্মি৷ ওম শানত্মি৷ ওম শানত্মি৷ (নগ্ন নধর কানত্মি আমরা তামাটে জাতি; মুহম্মদ নূরম্নল হুদা)
গহীন জঙ্গল থেকে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে আসা নাচের আদলে/ তোমার দেহের প্রতিটি ভাঁজ পাপড়ি মেলে দেয়৷ (রাত্রিবাস : বদ্ধ মাতাল রোদে, জাহাঙ্গীর ফিরোজ)
তুমি যে ল্যাবের ব্যাঙ/আলপিনে গাঁথা/ক্লোরোফরম মুখে নিয়ে বেদনা রহিত/অনিবার্য ঘুমে৷ (ধুলো : চিত্রল প্রতিবেদন, রনজু রাইম)
কবি রবীন্দ্রনাথ কবি জীবনানন্দ দাশের চিত্রকল্পসমৃদ্ধ কবিতা পাঠ করে তার ভেতর তাকিয়ে দেখার আনন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন৷ জীবনানন্দ দাশের কবিতা পূর্বাপর চিত্রকল্পসমৃদ্ধ৷ কয়েকটি দৃষ্টানত্ম:
হেমনত্মের মাঠে-মাঠে ঝরে/শুধু শিশিরের জল;/অঘ্রানের নদীটির শ্বাসে৷ হিম হয়ে আসে/বাঁশপাতা_ মরা ঘাস_ আকাশের তারা;/বরফের মতো চাঁদ ঢালিছে ফোয়ারা; (পেঁচা: ধূসর পা-ুলিপি) শ্যামার নরম গান শুনেছিল_ একদিন অমরায় গিয়ে/ছিন্ন খঞ্জনার মতো যখন সে নেচেছিল ইন্দ্রের সভায়/বাংলার নদী মাঠ ঘাসফুল ঘুঙুরের মতো তার কেঁদেছিল পায়৷ (বাংলার মুখ আমি : রূপসী বাংলা) চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,/মুখ তার শ্রাবসত্মীর কারম্নকার্য৷ (বনলতাসেন : বনলতা সেন) এই কথা বলেছিল তারে_/চাঁদ ডুবে চলে গেলে_ অদ্ভুত অাঁধারে/ যেন তার জানালার ধারে/উটের গ্রীবার মতো কোনো এক নিসত্মব্ধতা এসে৷ (আট বছর আগের একদিন : মহাপৃথিবী)
হাইড্র্যান্ট খুলে দিয়ে কুষ্টরোগী চেটে নেয় জল;/অথবা সে হাইড্র্যান্ট হয়তোবা গিয়েছিল ফেঁসে৷/এখন দুপুর রাত-নগরীতে দল বেঁধে নামে৷/ একটি মোটর কার, গাড়লের মতো গেল কেশে/অস্থির (পেট্রোল ঝেড়ে, (রাত্রি : সাতটি তারার তিমির)
ডাকিয়া কহিল মোরে রাজার দুলা,_/ডালিম ফুলের মত ঠোঁট যার, রাঙা আপেলের মতো লাল যার গাল,/চুল যার শাঙনের মেঘ, আর অাঁখি গোধূলীর মতো গোলাপী রঙিন৷ (ডাকিয়া কহিল মোরে রাজার দুলাল : ঝরা পালক)
ইমেজ বা চিত্রকল্প কবিতার অত্যনত্ম গুরম্নত্বপূর্ণ ও উপাদেয় উপাদান বটে, কিন্তু তা কোনো অর্থেই কবিতার বহিরঙের বিষয় নয়৷ ইমেজ হচ্ছে কবিতার অনত্মর্গত বিষয়ক, যা যুবতী নারীর বুকে বেড়ে ওঠা সত্মনযুগলের মতোই সহজাত ও স্বতঃস্ফূর্ত৷
Online Casino – A Go-To Casino
ReplyDeleteOnline casino, if you're ready for some 온카지노 good gaming, try Moo Casino. The online casino has an excellent selection of games and is a relatively 메리트 카지노 쿠폰 new 더킹카지노 casino to be